M S DHONI BIOGRAPHY IN BENGALI
মহেন্দ্র সিং ধোনী
(জন্ম: ৭ জুলাই, ১৯৮১)
মহেন্দ্র সিং ধোনীর অধিনায়কত্বে ভারত ২০০৭ আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০, ২০০৭-০৮ সালের সিবি সিরিজ, ২০০৮ সালের বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি, ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২-০ ব্যবধানে একটি সিরিজ ও ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয় করেছে। তার অধিনায়কত্বেই ভারত টেস্টের র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে উঠে এসেছিল। এখনও পর্যন্ত টেস্ট এবং ওয়ান-ডে ইন্টারন্যাশনালে তার রেকর্ড ভারতীয় অধিনায়কদের মধ্যে সেরা। তিনি ২০১৩ সালে ইংল্যান্ড এ অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয় করেন ,সেই সাথে বিশ্বের প্রথম অধিনায়ক যিনি আইসিসি র সব টুর্নামেন্ট জয় করার কৃতিত্ব রয়েছে । আইপিএল ২০১০ ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগে তিনি চেন্নাই সুপার কিংস দলের অধিনায়কত্ব করছেন। তার নেতৃত্বে ভারতীয় দল প্রথম শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে ইন্টারন্যাশনাল সিরিজ জয় করেছে এবং ভারত কুড়ি বছর পর অস্ট্রেলিয়াকে টেস্টে হারাতে সক্ষম হয়েছে।
ধোনী একাধিক সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ২০০৮ ও ২০০৯ সালে আইসিসি একদিনের ক্রিকেটের বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান। তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া তিনি ভারতের সর্বোচ্চ ক্রীড়া সম্মান রাজীব গান্ধী খেলরত্ন ও দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী পেয়েছেন।
একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট রেটিংয়ে জানুয়ারী ২০১০ সালে ধোনী সর্বোচ্চ র্যাঙ্কিংধারী খেলোয়াড়ের অধিকারী ছিলেন। ২০০৯ সালে ক্রিকেটের বাইবেল নামে পরিচিত উইজডেনের স্বপ্নের টেস্ট একাদশ দলের অধিনায়ক হিসেবে ঘোষিত হন এবং ফোর্বস ম্যাগাজিন কর্তৃক বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধনী ১০ ক্রিকেটারের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় হিসেবে মনোনীত হন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
২০০৯ সালে ধোনি আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট এবং আইসিসি ওডিআই দলের অধিনায়ক হিসেবে তার নাম ঘোষিত হয়। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের চূড়ান্ত খেলায় তিনি মাত্র ৭৯ বলে ৯১ রান করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অসাধারণ ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করলে ভারতীয় দল চ্যাম্পিয়ন হয়। ঐ খেলায় ধোনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের সম্মানজনক পুরস্কার লাভ করেন। বিশ্বের ইতিহাসে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জয় করেন ।
২০১১ সালে ধোনিকে ভারতের সামরিক বাহিনী লেফটেন্যান্ট কর্নেলের পদমর্যাদা প্রদান করে।
![]() |
M S DHONI images |
Personal life of M S Dhoni | মহেন্দ্র সিং ধোনীর ব্যক্তিগত জীবন
মহেন্দ্র সিং ধোনীর জন্ম বিহারের রাঁচিতে। তাঁর বাবা ও মায়ের নাম যথাক্রমে পান সিং ও দেবকী দেবী।ধোনিদের পৈতৃক নিবাস উত্তরাখণ্ড রাজ্যের আলমোড়া জেলার লামগাড়া ব্লকের লাওলি গ্রামে। পান সিং যখন রাঁচির মেকন লিমিটেডে জুনিয়র ম্যানেজারের পদে চাকরি করতেন, তখনই তার পরিবার উত্তরাখণ্ড থেকে রাঁচিতে চলে আসে। ধোনির এক বোন (জয়ন্তী) রয়েছেন। ধোনি আগে তাঁর প্রিয় অভিনেতা জন আব্রাহামের অনুকরণে লম্বা চুল রাখতেন। তিনি বাইক ভালবাসেন। তার গ্যারেজে চারটি গাড়ি ও ২৩টি হাইস্পিড মোটরসাইকেল আছে বলে গুজব প্রচলিত রয়েছে। তিনি জামাকাপড় থেকে কোল্ড ড্রিংকসের মোট পনেরোটি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশ নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ করদাতাদের একজন।ধোনি অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, তাঁর আশৈশব প্রিয় ক্রিকেটার শচীন তেন্ডুলকর, বলিউড অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন ও কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের একনিষ্ঠ ভক্ত।
ধোনী ডিএভি জহর বিদ্যা মন্দির, শ্যামলী তে পড়াশোনা করেছেন। সেখানেই তিনি ব্যাডমিন্টন এবং ফুটবলে অংশ নেন এবং জেলা ও ক্লাবপর্যায়ের খেলাগুলোয় মনোনীত হন। ফুটবল খেলায় ধোনি গোলরক্ষক হিসেবে অংশ নেন ও পরবর্তীকালে তার ফুটবল কোচ স্থানীয় ক্রিকেট ক্লাবে ক্রিকেট খেলার জন্য প্রেরণ করে। ক্রিকেটে ভাল না করলেও উইকেট রক্ষায় তার অসামান্য দক্ষতার দরুন কমান্ডো ক্রিকেট ক্লাবে (১৯৯৫-৯৮) পর্যন্ত নিয়মিতভাবে উইকেট-রক্ষকের গুরুদায়িত্ব পালন করেন। ক্লাব ক্রিকেটে তার অসাধারণ দক্ষতার ফলস্বরূপ ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশীপে ভিনু মানকড় ট্রফি জয় করে।১০ম শ্রেণীর পরপরই ধোনি ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরতে শুরু করেন।
M S Dhoni Marriage Life
৪ জুলাই, ২০১০ সালে সাক্ষী রাওয়াতকে বিয়ে করেন ধোনি। কলকাতার মেয়ে সাক্ষী ধোনি বর্তমানে হোটেল ব্যবস্থাপনায় অধ্যয়নরত এবং দু'বছর পূর্বে তাজ বেঙ্গলে শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজ শেখার সময় তারা একে-অপরের সাথে পরিচিত হন। বাগদানের একদিন পর প্রচার মাধ্যম ও ভক্তদের কাছে বিয়ের কথা প্রকাশ পায়।ঘটনার অব্যবহিত পরই ধোনির সবচেয়ে কাছের বন্ধু ও বলিউড অভিনেত্রী বিপাশা বসু খুব দ্রুত প্রচার মাধ্যমে ধোনি-সাক্ষীর বিয়ের ব্যাপারে বলেন যে, তাদের বিয়েটি একমাস পূর্বেই নির্ধারিত ছিল এবং এক মূহুর্তের সিদ্ধান্ত ছিল না।
মহেন্দ্র সিং ধোনীর খেলার ধরণ
মহেন্দ্র সিং ধোনী ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও উইকেটরক্ষক হিসেবেই ক্রীড়াঙ্গনে পরিচিত। জুনিয়র খেলোয়াড়দের মধ্যে ধোনি এক নম্বর উইকেটরক্ষক এবং ভারতীয় এ দলের বর্তমান খেলোয়াড় হিসেবে পার্থিব প্যাটেল, অজয় রাত্রা এবং দীনেশ কার্তিকের চেয়ে উপরে। বন্ধুদের কাছে মাহি নামে পরিচিত ধোনি বিহার ক্রিকেট দলের পক্ষে ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে অভিষেক ঘটান এবং ২০০৪ সালে ভারতীয় এ দলের পক্ষে কেনিয়া সফরে যান। গৌতম গম্ভীরের সাথে জুটি বেধে ত্রি-দেশীয় সিরিজে পাকিস্তান এ দলের বিপক্ষে কয়েকটি সেঞ্চুরি করেন। ঐ বছরই ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য হিসেবে মনোনীত হন ধোনি।
ধোনী সাধারণতঃ ব্যাক ফুটে গিয়ে ব্যাটিং করতে পছন্দ করেন। তিনি খুব দ্রুতগতিতে বলকে ব্যাটে স্পর্শ করে মাঠের বাইরে নিয়ে চার অথবা ছয় রান করেন। এতে তার পায়ের কারুকাজ তেমন পরিলক্ষিত হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত না বল তার কাছে আসে।
২০০৫ সালে ধোনী তার ব্যক্তিগত ৫ম ওডিআইয়ে পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের বিপক্ষে ১৪৮ রান করেন যা ভারতীয় ক্রিকেটে উইকেট-রক্ষকদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান। এক বছরের মধ্যেই তিনি তার নিজের রেকর্ড ভেঙ্গে তৎকালীন বিশ্বরেকর্ড হিসেবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ১৮৩ রান করেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ধারাবাহিক সাফল্যের পরপরই ধোনি টেস্ট দলে স্থান পান। ধারাবাহিক ক্রীড়ানৈপুণ্যের ফলে অতি অল্প সময়েই আইসিসি ওডিআই রেটিংয়ে বিশ্বের ১নং ব্যাটসম্যানের মর্যাদা পান ধোনি।এছাড়াও, বলকে নিপুণভাবে মারার ফলে ধোনির শটগুলো হেলিকপ্টার শট নামে পরিচিতি পায়।
![]() |
ms dhoni sports style |
ঘরোয়া ক্রিকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনী
1. জুনিয়র ক্রিকেটে
ধোনী ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে বিহার অনূর্ধ্ব-১৯ দলে যুক্ত হন এবং
৭ ইনিংসের ৫ খেলায় ১৭৬ রান করেন। দলটি গ্রুপে ৬ দলের মধ্যে ৪র্থ স্থান দখল করে ও কোয়ার্টার
ফাইনালে উত্তীর্ণ হতে পারে নাই।
2. বিহার দলে মহেন্দ্র সিং ধোনী
ধোনি ১৮ বছর বয়সে ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে বিহার ক্রিকেট দলের পক্ষে রঞ্জি ট্রফিতে নিজেকে অভিষিক্ত করেন। অভিষেক ম্যাচে আসাম ক্রিকেট দলের বিপক্ষে অপরাজিত ৬৮ রান করেন।ঐ মৌসুমে তিনি ৫ খেলায় ২৮৩ রান সংগ্রহ করেন। বেঙ্গল ক্রিকেট দলের বিপক্ষে ২০০০-০১ মৌসুমে ১ম শ্রেণীর ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করেন।
২০০২-০৩ মৌসুমে রঞ্জি ট্রফিতে তিনটি অর্ধ-শতক এবং দেওধর ট্রফি প্রতিযোগিতায় দু'টি অর্ধ-শতক করে হার্ড হিটিং ব্যাটিংয়ের পরিবর্তে নীচের সারির ব্যাটসম্যান হিসেবে রান করার মাধ্যমে জয়ে অংশগ্রহণ ও প্রাধান্য বিস্তারে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন।
ধোনি ২০০৩-০৪ মৌসুমে রঞ্জি ওডিআই ট্রফিতে আসামের বিপক্ষে ১ম খেলায় অপরাজিত ১২৮* রান করেন। ইস্ট জোন ক্রিকেট দলের পক্ষে ৪ ম্যাচে ২৪৪ রান করে দেওধর ট্রফি জয়ে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন।
3. ভারতীয় এ-দলে
সাফল্যের সূত্র ধরে ধোনি ২০০৩-০৪ মৌসুমে ভারতীয় এ-দলের
পক্ষ হয়ে জিম্বাবুয়ে এবং কেনিয়া সফর করেন। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আয়াজিত জিম্বাবুয়ে
একাদশের বিপক্ষে ধোনি তার সেরা সাফল্য হিসেবে ৭ ক্যাচ ও ৪টি স্ট্যাম্পিং করেন। কেনিয়া,
ভারত-এ এবং পাকিস্তান-এ দল নিয়ে অনুষ্ঠিত ত্রি-দেশীয় টুর্ণামেন্টে ধোনি পাকিস্তানের
২২৩ রানের লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে অর্ধ-শতক রান করেন। সাফল্যের পদচারণায় তিনি পাকিস্তান-এ
দলের বিপক্ষে ১২০ ও ১১৯* - দু'বার সেঞ্চুরি করেন। ধোনি টুর্ণামেন্টে ৭ খেলায় ৬ ইনিংসে
৭২.৪০ গড়ে ৩৬২ রান করে ভারতীয় জাতীয় দলের তৎকালীন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী এবং রবি
শাস্ত্রী প্রমূখের মনোযোগ ও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কিন্তু, ভারতীয় এ দলের কোচ সন্দ্বীপ
পাতিল দীনেশ কার্তিককে ভারতীয় দলে উইকেট-রক্ষক কাম ব্যাটসম্যান হিসেবে অন্তর্ভুক্তির
জন্য সুপারিশ করেন।
একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধোনী
একদিনের ক্রিকেটে দলে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ ম্যাচের সিরিজে সহ-অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন ধোনি। ২ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনি তার প্রিয় তারকা খেলোয়াড় অ্যাডাম গিলক্রিস্টের আন্তর্জাতিক রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড গড়েন। ইংল্যান্ডের ৫ জন খেলোয়াড়ের ক্যাচ এবং একটি স্ট্যাম্পিং করে এ নতুন রেকর্ডে নাম লেখান ধোনি। ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত আইসিসি ওয়ার্ল্ড টি-২০ ট্রফির ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ী হয়। এতে ধোনি ভারতের ২য় অধিনায়ক হিসেবে কপিল দেবের বিশ্বকাপ ক্রিকেট জয়ের পর যে-কোন স্তরের ক্রিকেটে সেরা সাফল্য লাভ করেন। ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০০৯ তারিখে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধোনি প্রথমবারের মতো উইকেট লাভ করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ট্রাভিস ডাউলিনকে বোল্ড করে এ কৃতিত্ব দেখান তিনি। ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের ২য় খেলায় ধোনি মাত্র ১০৭ বলে ১২৪ করেন। ৩য় খেলায় যুবরাজ সিংকে সাথে নিয়ে ৯৫ বলে ৭১ রান করেন ও ভারত ৬ উইকেটে জয়ী হয়।
২০০৯ সালে মাত্র ২৪ ম্যাচে ৭০.৪৩ রান গড়ে ১১৯৮ রান করে তার সফলতম বছর পার করেন।
একদিনের ক্রিকেটে দলে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ ম্যাচের সিরিজে সহ-অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন ধোনি। ২ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনি তার প্রিয় তারকা খেলোয়াড় অ্যাডাম গিলক্রিস্টের আন্তর্জাতিক রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড গড়েন। ইংল্যান্ডের ৫ জন খেলোয়াড়ের ক্যাচ এবং একটি স্ট্যাম্পিং করে এ নতুন রেকর্ডে নাম লেখান ধোনি। ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত আইসিসি ওয়ার্ল্ড টি-২০ ট্রফির ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ী হয়। এতে ধোনি ভারতের ২য় অধিনায়ক হিসেবে কপিল দেবের বিশ্বকাপ ক্রিকেট জয়ের পর যে-কোন স্তরের ক্রিকেটে সেরা সাফল্য লাভ করেন। ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০০৯ তারিখে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধোনি প্রথমবারের মতো উইকেট লাভ করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ট্রাভিস ডাউলিনকে বোল্ড করে এ কৃতিত্ব দেখান তিনি। ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের ২য় খেলায় ধোনি মাত্র ১০৭ বলে ১২৪ করেন। ৩য় খেলায় যুবরাজ সিংকে সাথে নিয়ে ৯৫ বলে ৭১ রান করেন ও ভারত ৬ উইকেটে জয়ী হয়।
![]() |
international cricket MS Dhoni |
টেস্ট ক্রিকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনী
ওয়ান-ডে ক্রিকেটে ধোনি'র অসাধারণ ফলাফলে ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের উইকেট-রক্ষক হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে দীনেশ কার্তিকের স্থলাভিষিক্ত হন। বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলায় ধোনি তার অভিষেক টেস্ট ম্যাচে ৩০ রান করেন। যখন তিনি ক্রিজে নামেন তখন ভারতীয় দল ১০৯ রান নিতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে এবং ধারাবাহিকভাবে উইকেট পড়তে থাকলেও তার আগ্রাসী ইনিংসে দলের সর্বশেষ ব্যক্তি হিসেবে আউট হন। ২য় টেস্টেই প্রথম অর্ধ-শতকের দেখা পান তিনি এবং ৫১ বলে করা তার দ্রুত অর্ধ-শতকের সাহায্যে ভারত ৪৩৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে ও শ্রীলঙ্কানরা ২৪৭ রানে অল-আউট হয়ে যায়।
জানুয়ারি/ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ সালে পাকিস্তান সফরে ফয়সালাবাদে অনুষ্ঠিত ২য় টেস্টে ধোনি তার প্রথম শতক লাভ করেন। ইরফান পাঠানকে সাথে নিয়ে যখন তিনি জুটি গড়েন তখনও ফলো-অন থেকে দলটি ১০৭ রান দূরে ছিল। এ অবস্থায় তার স্বভাবসুলভ আগ্রাসী ইনিংসে ৩৪ বলে অর্ধ-শত রান করেন এবং মাত্র ৯৩ বলে তার প্রথম সেঞ্চুরি করেন।
২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে ধোনি দু'টি সেঞ্চুরি করেন এবং ৩ ম্যাচের সিরিজে ভারতীয় দল ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়লাভ করে। এ জয়ের ফলেই প্রথমবারের মতো ভারতীয় দল আইসিসি ক্রিকেট রেটিংয়ে ১নং স্থান দখল করে। এছাড়াও, ৩য় টেস্টে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ৭২৬ রান ঘোষণা করে তাদের দলের ইতিহাসে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশী রান করার কৃতিত্ব দেখায়।
![]() |
Test Career |
অধিনায়ক হিসেবে ধোনী
সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দেন ধোনি। প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত ও উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় দলের যথাযোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে পাকিস্তান দলকে পরাজিত করলে ভারতীয় দল চ্যাম্পিয়ন হয়।
তারপর তিনি সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালে ৭ ম্যাচের একদিনের ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে দলকে নেতৃত্ব দেন।
নভেম্বর, ২০০৮ সালে টেস্ট দলের অধিনায়ক হিসেবে নাগপুরে অনুষ্ঠিত ৪র্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে ৩য় টেস্টে অবসরগ্রহণকারী অনিল কুম্বলের স্থলাভিষিক্ত হয়ে ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দেন।
২ এপ্রিল, ২০১১ তারিখে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে অপরাজিত ৯১ রান করেন ধোনি। শচীন তেন্ডুলকর এ প্রসঙ্গে ধোনি'র উচ্ছসিত প্রশংসা করে বলেন যে দীর্ঘদিনের ক্রিকেট জীবনে সকল অধিনায়কের তুলনায় ধোনিই তার দৃষ্টিতে সেরা। তেন্ডুলকর উল্লেখ করেন যে, ধোনি'র শান্ত ও ধীরচিত্তের খেলা দলীয় খেলোয়াড়দের মনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে এবং কঠিন চাপের মধ্যেও সফলভাবে মোকাবেলা করেছেন যা ছিল সত্যিকার অর্থেই অবিশ্বাস্য।
অন্যদিকে, সৌরভ গাঙ্গুলী সংবাদ মাধ্যমগুলোতে এক সাক্ষাৎকারে ধোনিকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করেন এবং বলেন যে, তিনি এমন একটি বিরল রেকর্ড স্থাপন করেছেন যার ফলে তার প্রশংসা করতেই হয়।
![]() |
MS Dhoni Captain Cool |
দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধতা
১৮ ডিসেম্বর, ২০০৯ সালে নাগপুরে অনুষ্ঠিত ভারত বনাম শ্রীলঙ্কার
মধ্যকার ২য় একদিনের ক্রিকেটে দলীয়ভাবে ধীরগতিতে বোলিং করার কারণে আইসিসি'র ম্যাচ
রেফারী নিউজিল্যান্ডের জেফ ক্রো কর্তৃক ধোনি পরবর্তী দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত
হন।
বিশ্বকাপ ২০১১
ধোনি'র অধিনায়কত্বে ভারত শ্রীলঙ্কাকে ফাইনালে পরাজিত করে ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়। শ্রীলঙ্কার ২৭৪ রানের জবাবে স্নায়ুযুদ্ধের লড়াইয়ে ধোনি ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করেন। এর ফলে টিম ইন্ডিয়া বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। যখন তিনি ব্যাটিং করতে নামেন তখন ভারতীয় দলের ওভারপিছু ৬ রানের দরকার ছিল। এছাড়াও, তিনজন প্রথমসারির ব্যাটসম্যান ইতোমধ্যে আউট হয়ে গেছেন। এ অবস্থায় ধোনি গৌতম গম্ভীরের সাথে শক্ত জুটি গড়েন এবং খুব দ্রুতগতিতে এক কিংবা দুই রান নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন। ফলে, প্রতি ওভারে ৫ কিংবা ৬ রান নিতে থাকায় শ্রীলঙ্কার মনোবল ভেঙ্গে যায়। পরে তিনি তার স্বভাবসুলভ চার ও ছয়ের মার মারতে থাকেন। শেষ পর্যায়ে ধোনি নুয়ান কুলাসেকারা'র বলে ডিপ লং অঞ্চল দিয়ে ছক্কা মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
পুরস্কার বিতরণীর পর ধোনি বলেন যে, মুরালিধরনের স্পিন আক্রমণ ঠেকাতেই তিনি ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন এনেছিলেন। উল্লেখ্য, আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের সহ-খেলোয়াড় হিসেবে ছিলেন মুরালিধরন, যা তার বোলিং আক্রমণ সম্পর্কে পূর্বেই সম্যক অবহিত ছিলেন ধোনি।
![]() |
world cup champions 2011 |
0 comments:
Post a Comment